খোশ আমদেদ মাহে রমজান ২০২৩, হিজরী ১৪৪৪। প্রবাসীর দিগন্ত সংবাদ এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই পবিত্র মাহে রমজান ২০২৩ এর শুভেচ্ছা। বছর ঘুরে মানবতার সুমহান আদর্শ নিয়ে মুসলমানদের দরবারে হাজির হচ্ছে পবিত্র রমজান। শান্তি, সমপ্রীতি, ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংযমের বার্তা নিয়ে প্রতি বছর বিশ্ববাসীর কাছে হাজির হয় পবিত্র কুরআন ঘোষিত শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র মাহে রমজান। এই রমজান মাস যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করবেন বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।
২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রমজানের চাঁদ দেখা গেলে ২০২৩ সালের রমজানের প্রথম রোজা হবে শুক্রবার, ২৪ মার্চ। যেহেতু রমজানের প্রথম রোজা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল, সেহেতু ২৩ মার্চ যদি রমজানের চাঁদ দেখা যায় তবে ২৩ তারিখ রাতে তারাবিহ পড়ে ভোর রাতে সেহরি খেতে হবে। ২৪ মার্চ হবে ২০২৩ সালের রমজানের প্রথম রোজা।
২০২৩ সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। প্রতি বছরের নেয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সুবিধার্থে প্রবাসীর দিগন্ত সংবাদের পক্ষ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৩ সালের ঢাকা জেলা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মাহে রমজানের সেহরী ও ইফতারের সময়সূচী জানিয়ে দেওয়া হলো।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যদি ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রমজানের চাঁদ না দেখা যায়, তবে নতুন সময়সূচী পেতে এখানে ক্লিক করুন, রমজান ক্যালেন্ডার।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৩:
এই সময়সূচি ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য প্রযোজ্য। অন্যান্য দেশ, শহর এবং বাংলাদেশের জেলা অনুযায়ী সেহরি ও ইফতারের সময়সূচির লিংক এবং ডাউনলোড লিংক নিচে দেওয়া আছে।
রোজার নিয়ত আরবি
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
রোজার নিয়ত বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ! আগামীকাল পবিত্র রমযান মাসে তোমার পক্ষ হতে ফরয করা রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম, অতএব তুমি আমার পক্ষ হতে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের দোয়া সহীহ
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।
মাহে রমজান ২০২৩ সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী
নোটঃ ঢাকা জেলার জন্য প্রযোজ্য।
রহমতের ১০ দিন
নং | তারিখ | দিবস | সেহরির শেষ সময় | ইফতারের সময় |
---|---|---|---|---|
১ * | ২৪ মার্চ | শুক্রবার | ৪:৩৯ | ৬:১৪ |
২ | ২৫ মার্চ | শনিবার | ৪:৩৮ | ৬:১৫ |
৩ | ২৬ মার্চ | রবিবার | ৪:৩৬ | ৬:১৫ |
৪ | ২৭ মার্চ | সোমবার | ৪:৩৫ | ৬:১৬ |
৫ | ২৮ মার্চ | মঙ্গলবার | ৪:৩৪ | ৬:১৬ |
৬ | ২৯ মার্চ | বুধবার | ৪:৩৩ | ৬:১৭ |
৭ | ৩০ মার্চ | বৃহস্পতিবার | ৪:৩১ | ৬:১৭ |
৮ | ৩১ মার্চ | শুক্রবার | ৪:৩০ | ৬:১৮ |
৯ | ১ এপ্রিল | শনিবার | ৪:২৯ | ৬:১৮ |
১০ | ২ এপ্রিল | রবিবার | ৪:২৮ | ৬:১৯ |
মাগফেরাতের ১০ দিন
নং | তারিখ | দিবস | সেহরির শেষ সময় | ইফতারের সময় |
---|---|---|---|---|
১১ | ৩ এপ্রিল | সোমবার | ৪:২৭ | ৬:১৯ |
১২ | ৪ এপ্রিল | মঙ্গলবার | ৪:২৬ | ৬:১৯ |
১৩ | ৫ এপ্রিল | বুধবার | ৪:২৪ | ৬:২০ |
১৪ | ৬ এপ্রিল | বৃহস্পতিবার | ৪:২৪ | ৬:২০ |
১৫ | ৭ এপ্রিল | শুক্রবার | ৪:২৩ | ৬:২১ |
১৬ | ৮ এপ্রিল | শনিবার | ৪:২২ | ৬:২১ |
১৭ | ৯ এপ্রিল | রবিবার | ৪:২১ | ৬:২১ |
১৮ | ১০ এপ্রিল | সোমবার | ৪:২০ | ৬:২২ |
১৯ | ১১ এপ্রিল | মঙ্গলবার | ৪:১৯ | ৬:২২ |
২০ | ১২ এপ্রিল | বুধবার | ৪:১৮ | ৬:২৩ |
নাজাতের ১০ দিন
নং | তারিখ | দিবস | সেহরির শেষ সময় | ইফতারের সময় |
---|---|---|---|---|
২১ | ১৩ এপ্রিল | বৃহস্পতিবার | ৪:১৭ | ৬:২৩ |
২২ | ১৪ এপ্রিল | শুক্রবার | ৪:১৫ | ৬:২৩ |
২৩ | ১৫ এপ্রিল | শনিবার | ৪:১৪ | ৬:২৪ |
২৪ | ১৬ এপ্রিল | রবিবার | ৪:১৩ | ৬:২৪ |
২৫ | ১৭ এপ্রিল | সোমবার | ৪:১২ | ৬:২৪ |
২৬ | ১৮ এপ্রিল | মঙ্গলবার | ৪:১১ | ৬:২৫ |
২৭ | ১৯ এপ্রিল | বুধবার | ৪:১০ | ৬:২৫ |
২৮ | ২০ এপ্রিল | বৃহস্পতিবার | ৪:০৯ | ৬:২৬ |
২৯ | ২১ এপ্রিল | শুক্রবার | ৪:০৮ | ৬:২৬ |
৩০ * | ২২ এপ্রিল | শনিবার | ৪:০৭ | ৬:২৭ |
* চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। বিশেষ দ্রষ্টব্য: ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সাহরীর শেষ সময় সতর্কতামূলক ভাবে সুবহি সাদিকের ৩ মিনিট পূর্বে ধরা হয়েছে, এবং সূর্য অস্তের পর সতর্কতামূলক ভাবে ৩ মিনিট বাড়িয়ে ইফতারের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেখুন প্রতিদিনের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচির লাইভ আপডেট
রোজার নিয়ত:
বাংলায় উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গদাম মিন শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।
অর্থ: আয় আল্লাহ পাক! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের রমাদ্বান শরীফ-এর ফরয রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা , সর্বজ্ঞাত।
মাসআলা: কেউ যদি ছুবহি ছাদিক্বের পূর্বে নিয়ত করতে ভুলে যায় তাহলে তাকে দ্বিপ্রহরের পূর্বে নিয়ত করতে হবে। তখন এভাবে নিয়ত করবে:
বাংলায় উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমাল ইয়াওমা মিন শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফা তাক্বাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।
ইফতারের দোয়া:
বাংলায় উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সুমতু লাকা, ওয়া তাওআক্কালতু আ‘লা রিঝক্বিকা, ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।
অর্থ: আয় আল্লাহ পাক! আমি আপনারই সন্তুষ্টির জন্য রোযা রেখেছি এবং আপনারই দেয়া রিযিক্ব দ্বারা ইফতার করছি।
ইফতার-এর সুন্নত আমলসমূহ:
- খুরমা বা খেজুর দ্বারা ইফতার শুরু করা সুন্নত। আমাদের নবীজি খুরমা বা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন।
- ওয়াক্ত হওয়া অর্থাৎ আযান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা সুন্নত। হাদীছে কুদসী শরীফ-এ রয়েছে, আল্লাহ পাক বলেছেন: “আমার বান্দাদের মধ্যে আমার নিকট অধিকতর প্রিয় ওই ব্যক্তিরাই যারা তাড়াতাড়ি ইফতার করে অর্থাৎ সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে।” কিন্তু সময় হয়নি এমন অবস্থায়
- দ্রুত পানাহার করলে ক্বাযা-কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়ে যাবে। তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- ইফতার করার পূর্বে তিনবার দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে।
- কোন রোযাদারকে ইফতার করানো। এটি একটি অত্যধিক ফযীলতপূর্ণ কাজ।
বিঃ দ্রঃ সকলকেই সাহরীর ও ইফতার-এর সময়ের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যেনো কোনো অবস্থাতেই সময় কম বা বেশি না হয়। আর তাই অনেক কামেল ব্যক্তিবর্গ মনে করেন সেজন্য সাবধানতার নিমিত্তে সাহ্রী-এর সময় থেকে ৫ মিনিট কমিয়ে ও ইফতারী-এর সময় থেকে ১/২ মিনিট বাড়িয়ে সাহরী ও ইফতার করা উচিত। একটি হাদিস শরীফে আছে ইফতার ও সাহরীর ঘোষণার জন্য সাইরেন বাজানো হারাম। তবে ইফতারীর জন্য আযান দেয়া আর সাহরীর জন্য মুখে বা মাইকে ঘোষণা দেয়াই সর্বোত্তম।
রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহ:
- ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
- স্ত্রী সহবাস করলে।
- কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
- ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
- নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
- জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে।
- ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
- কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
- সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
- পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
- দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
- ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
- মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে।
- রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
- মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
রোজার মাকরুহগুলো:
- অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা।
- কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা।
- গড়গড় করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
- ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করা।
- গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-ফাসাদ করা। কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্থর দিতে অক্ষম।
- সারাদিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ।
- অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করা।
- কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা।